মহাশিবরাত্রি ব্রতকথা
শিবমহাপুরাণ অনুসারে, বহুকাল আগে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে দিনরাত শুধু জীবহত্যা করে বেড়াত। একদিন ব্যাধ শিকার করতে গিয়ে , অনেক পশু পাখি শিকার করে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বাড়ির দিকে রওনা হল। কিছুদূর আসতেই রাত্রি হয়ে গেল। ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হীংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয় ।ব্যাধ যে গাছে আশ্রয় নিয়েছিল, সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই গাছের নিচে ছিল শিবলিঙ্গ । ব্যাধ গাছে নড়ে-চড়ে বসার সময় শিশির জলে ভেজা একটি একটি বেলপাতা খসে পড়লো ঐ শিবলিঙ্গের মাথার উপর। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ সকালে বাড়ি ফিরে এলো। সবাই তো তার জন্য ভাবছিল। ব্যাধ ফিরে আসতে তাকে তার বৌ খেতে দিল। এমন সময় একজন অতিথি বাড়িতে এলো। ব্যাধ কি ভেবে তার নিজের খাবারগুলি অতিথিকে দিল । এতে তার ব্রতের পারণ ফল লাভ হলো।
এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে। যমদূতরা তাকে নিতে আসে, এমন সময় সেখানে এলো শিবের দুতেরা। দুই দলে যুদ্ধ বেধে গেল, যম দুতেরা যুদ্ধে হেরে গেল। শিবদূতরা ব্যাধকে কৈলাসে নিয়ে এলো। যমদূতেরাও তার পিছনে পিছনে ধাওয়া করলো।
কৈলাসের দ্বারে নন্দী পাহারায় ছিল, সে ব্যাধের শিব রাত্রির কথা বললো, তাই শুনে যমদূতেরা গিয়ে যমকে সব কথা বললে। যমরাজ শুনে বললেন - হ্যাঁ, যে শিব বা বিষ্ণুর ভক্ত কিংবা যে শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে আর যে বারানসী ধামে মরে, তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকেনা। সে মুক্তিলাভ করে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।