ওঁ উচ্চারণ করতে গেলে আমরা তিনটি শব্দ পাই তা হলঃ— অ + উ + ম এই শব্দে পাওয়া যায় তিনটি মহাশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর।গুরু প্রনাম মন্ত্র নামে একটি মন্ত্র আছে ওই মন্ত্রটিতে অর্থ বুঝায় যে শুরু জগতের তিনজন গুরু আছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর নামে এই তিন শক্তিকে একশক্তি বলা হয়েছে পরমব্রহ্মকে।
আরো পড়ুন- খাঁচার মধ্যে ভগবান
গুরুর প্রনাম মন্ত্র
গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু, গুরুদেব মহেশ্বর,
গুরু সাক্ষাৎ পরমব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।
গুরু প্রনাম মন্ত্রটি জগতে কি?
- ব্রহ্মাকে জগতের মহাগুরু বলা হয়েছে।
- বিষ্ণুকে জগতের সৃষ্টি পালনের গুরু বলা হয়েছে।
- মহেশ্বরকে জগতের সৃষ্টি প্রলয়ের গুরু বলা হয়েছে।
- এই তিনজনেই এই জগতের মহা আদিগুরু বলা হয়েছে যাকে আমরা ওঁ নামে জানি।
Read More- What is Guru Purnima?
ব্রহ্ম শব্দের অর্থ কি?
ব্রহ্ম শব্দের অর্থ সর্ব্ববৃহৎ। যাঁর থেকে বড় কেউ নেই যিনি সকল কিছুর স্রষ্টা এবং যাঁর মধ্যে সকল কিছুর অবস্থান ও বিলয় তিনিই ব্রহ্ম।
আশ্রম ধর্মের বিদ্যা
আমাদের সনাতন ধর্মে জীবনকে স্বার্থক ও গৌরবময় করার জন্য কয়টি আশ্রমের কথা বলা হয়েছে চারটি, যথা
ব্রহ্মচর্যাশ্রম— (১ম পঁচিশ বছর)
গার্হস্থ্য আশ্রম— (২য় পঁচিশ বছর)
বানপ্রস্থ আশ্রম— (৩য় পঁচিশ বছর)
সন্ন্যাস ধর্ম— (৪র্থ তথা শেষ পঁচিশ বছর)।
Read More- Who is Real Guru?
সনাতন ধর্মে আশ্রমধর্ম হচ্ছে যুগধর্ম। প্রাচীনকালে ঋষিগণদের ধ্যান সাধনার দ্বারা বেদের জ্ঞান মানব জীবনের জন্য চারটি পর্যায়ে বিভক্ত করে দেখেছেন যেমনঃ— ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস এই চারটিকে একত্রে বলা হয় চতুরাশ্রম।
আশ্রম গুরুগৃহ থেকে বিদ্যা অর্জন করে ব্রহ্মচর্য পালন করে যে সেই মনুষ্য এই জগতের একমাত্র ব্রহ্ম নিজেকে কিভাবে দাবি করতে পারে। আশ্রমধর্মের বিদ্যা শিক্ষাকারী গুরুও নিজেকে এই জগতের একমাত্র ব্রহ্ম কিভাবে দাবি করতে পারে।
আরো পড়ুন- আমাদের জীবনে বিবাহ কতটা গুরুত্বপূর্ণ
গুরু ভগবান
সনাতন ধর্মের কলিযুগের মনুষ্যগণ গুরুকে শ্রদ্ধা করে ভগবান বানিয়ে রেখেছে।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী স্বয়ং বলেছিলেন, তোরা আমার চরণ ধরিস না, আচরণ ধর।
এজন্য গুরুগীতায় বলা হয়েছে
গুরবো বহবঃ সন্তি শিষ্যবিত্তাপহারকাঃ |
তমেকং দুর্লভং মন্যে শিষ্যহৃত্তাপহারকম্ ||
(গুরুগীতা,৩/২৬৯)
অর্থাৎ, শিষ্যের বিত্ত (ধন সম্পদ) অপহরণকারী গুরু অনেক, এই সংসারে অনেক আছেন কিন্তু শিষ্যের শস্তাহরনকারি (সংসার দুঃখ নিবারন করে মুমুক্ষু করে তোলে মোক্ষ লাভের সন্ধান দাতা) কিন্তু গুরু এই সংসারে বর দুর্লভ। (গুরুগীতায় ৩/২৬৯ নিয়ে ব্যাখ্যা)
শিষ্যের ধন সম্পদ অপহরণ করার মত গুরু অনেক, কিন্তু শিষ্যের হৃদয়ের তাপ হরণ করতে পারে গুরু এই দুর্লভ। তাই যে গুরু নিজেকে ভগবান দাবী করে, নিজের পরিবারকে দেবতার আসনে বসিয়ে তাদের বিনা পরিশ্রমে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, সেসব গুরুকে তার পরিবার সহ এক্ষুনি পরিত্যাগ করুন নয়তোবা পরে পস্তাবেন।
গীতার উপদেশ অনুসার বলতে চাই যে—
উদ্ধরেদাত্মনাত্মানং নাত্মানমবসাদয়েৎ।
আত্মৈব হ্যাত্মনো বন্ধুরাতৈব রিপুরাত্মনঃ।
(গীতা, ৬/৫)
অর্থাৎ— নিজের দ্বারা নিজেকে উদ্ধার করো, নিজেকে কখনও অধোগতির পথে যেতে দেবে না নিজেকে নিজেই অধোগতির পথে নিয়ে গিয়ে পতন ঘটিও না। কেননা নিজের মিত্র নিজেই এবং নিজের শত্রু তুমি নিজেই।
সকলে গুরু চিনতে সাবধান
যে গুরু আপনাকে বলবে ভগবানকে বাদ দিয়ে তাকে পূজা করতে সে গুরু হতে সাবধান। সময় থাকতে গুরু চিনেন নইলে সময় চলে গেলে আর কিছু করার থাকবে না তখন সনাতন ধর্ম পুটুস হয়ে যাবে।
তাই সেই গুরুকে গুরু মান্য করুন যে আপনাকে পরমাত্মা সম্পর্কে জানার জন্য ভগবানের ভজনা করতে শিখাবেন, কখনোই নিজেকে পূজা করা শিখাবেন না তাই গুরু সাধু হইতে সাবধান।
শ্রী বাবলু মালাকার
শ্রী বাবলু মালাকার মশাই, আপনিও সাবধানে থাকুন কারণ আপনিও ঠকেই গেছেন!!
উত্তরমুছুনসদগুরুকে আপনি চিনতে পারেননি!! 🙏🏻🙏🏻
গুরুগীতার ১১১ নং শ্লোক নয়। গুরুগীতা তৃতীয় অধ্যায় ২৬৯ নং শ্লোক।
উত্তরমুছুন