হিন্দুরা প্রতিমা পানিতে বিসর্জন কেন দেয়। জানুন যুক্তির দ্বারা।

হিন্দুরা প্রতিমা বিসর্জন কেন দেয়। জানুন যুক্তির দ্বারা।

প্রতিমা বিসর্জন কেন দেওয়া  হয়এ যেন প্রতিটা হিন্দুর মনের এক বিস্ময়কর প্রশ্ন।
আসুন জানার চেষ্টা করি।

আচ্ছা কখনো ভেবে দেখেছেন।
প্রতিমা যখন বানানো হয়, তখন প্রতিমার সামনে গিয়ে নমস্কার করেন?
নাকি প্রার্থনা করেন?
নিশ্চয় কোনটায় নয়।

যখন থেকে প্রতিমার মাঝে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়।তখনি আপনি ঈশ্বরের চিন্ময়ী সাকার রুপের মাধ্যম হিসেবে কল্পনা করেন।তখন আপনি করজোড়ে প্রণাম করেন আর বিশ্বাস করে পূজা করেন।
আবার যখন পূজা শেষ হয় তখন প্রতিমার মাঝে আপনি আর ঈশ্বরের চিন্ময়ী সত্তাকে কল্পনা করেন না।
ঠিক যেমন আমাদের প্রিয়জনের ছবির মত।
প্রিয়জনের ছবিতে আপনার প্রিয়জনের সত্তাকে খুঁজে পান।
যদিও ছবি মাত্র।আপনার উদ্দেশ্য হল ছবি দেখে মনে তৃপ্তি লাভ করা।কিন্তু যখন সে ছবিটি ছিড়ে যায় বা কোন কারণে নষ্ট হয়। তখন আপনি সে ছবিটি কোথায় রাখেন?
নিশ্চয় ঘরের কোণে রাখবেন না। কারণ যদি পায়ে লাগে ভুলে বা অন্যভাবে সেটি অসম্মানিত হয়।
তাই আপনি সে ছবি জলে ভাসিয়ে দিবেন।যাতে জলে মিশে যায়।
কারণ জলই একমাত্র পর্দাথ যা এসব পর্দাথকে মিশিয়ে দেয়।
☞তাহলে একটিবার ভাবুন ত।
যে প্রতিমাতে আপনি পূজার শুরু থেকে শেষ অবদ্ধি ঈশ্বরের চিন্ময়ী রুপের কল্পনা করেন।ততদিন আপনার কাছে সেটি মাটির প্রতিমা নয়, মৃন্ময়ী রুপী চিন্ময়ী এক সত্তা। কিন্তু পূজা শেষে আপনি আর প্রতিমাতে কল্পনা করেন না সে সত্তা।তখন সেটি মাটির প্রতিমা মাত্র।
যেসব প্রতিমা সব সময় পূজা করা হয়।সেসব প্রতিমাতে সর্বদা চিন্ময়ী সত্তাকে আমরা খুঁজে পায়।কিন্তু যেসব প্রতিমা কিছু বিশেষ তিথি উপলক্ষে বানিয়ে চিন্ময়ী সত্তা রুপে পূজা করা হয়, পূজা শেষে সেসবের প্রয়োজন হয় বিসর্জনের।
যেহেতু প্রতিমা মাটির তৈরী।প্রকৃতিতে মাটি মিশে যাওয়ার একমাত্র উপায় হল জল।
তাই জলে বিসর্জন দেওয়া হয়।
এ যেন প্রকৃতি প্রকৃতিতে লীন হওয়ার এক চক্রমাত্র।
☞স্বামী বিবেকানন্দের সেই অমর কথাটি আবারো বলতে হয়
‘পুতুল পূজা করে না হিন্দু
কাঠ মাটি দিয়ে গড়া
মৃন্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে,
হয়ে যাই আত্মহারা।‘
এবার আপনিই বিচার করুন।
বিজয় বিদ্যার্থী
★★★★★★★★
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ
নবীনতর পূর্বতন