আমরা সনাতনীরা শ্রীকৃষ্ণে নাম নিতে গেলে গোবিন্দ ও গোপাল বলে থাকি। কিন্তু এই শ্রীকৃষ্ণ গোবিন্দ গোপালই গো রক্ষক ছিল। কিন্তু আমাদের সনাতনীরা কি গো রক্ষা করেন নাকি গো মাংস খাওয়ার চিন্তা করেন।
শ্রীকৃষ্ণ নামে গোবিন্দ ও গোপাল কৃষ্ণের দুটি বিশেষ নাম ও রূপ। এই রূপে তিনি একটি অল্পবয়স্ক রাখাল বালক ছিল। গোবিন্দ ও গোপাল দুটি নামেরই অর্থ রাখাল। সংস্কৃতে গো শব্দের অর্থ গোরু আর পাল বা বিন্দ শব্দের অর্থ যথাক্রমে অন্বেষনকারী বা রক্ষক।
গোবিন্দ’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে যিনি গাভী এবং ইন্দ্রিয়গুলিকে আনন্দ দান করেন।
গোবিন্দ (বিশেষ্য পদ) শ্রীকৃষ্ণ, বিষ্ণু।
গোপাল (বিশেষ্য পদ) ভূপতি, রাজা গোপ, রাখাল, শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের নাম।
গোবিন্দ (বিশেষ্য পদ) শ্রীকৃষ্ণ, বিষ্ণু।
গোপাল (বিশেষ্য পদ) ভূপতি, রাজা গোপ, রাখাল, শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকালের নাম।
এখানে গো অর্থ কি?
গো (সংস্কৃত, গম+ও) গোরু, গরু (সংস্কৃত, গরূপ)। অর্থ হলোঃ— জ্ঞান, ঐশ্বর্য, ধনু, গাভি, ষাঁড়, বৃষ, নিরেট বোকা, মূর্খ প্রভৃতি।
গো (সংস্কৃত, গম+ও) গোরু, গরু (সংস্কৃত, গরূপ)। অর্থ হলোঃ— জ্ঞান, ঐশ্বর্য, ধনু, গাভি, ষাঁড়, বৃষ, নিরেট বোকা, মূর্খ প্রভৃতি।
গো (বিশেষ্য পদ) গরু, গো-জাতি, পশু, স্বর্গ, রশ্মি, চন্দ্র, চক্ষু গোচর, পৃথিবী গোপতি।
বাংলাদেশের বাংলা একাডেমি উচ্চারণ অভিধান ও ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে ‘গরু’ লেখা হয়েছে। গরু, গোরু (বিশেষ্য পদ) গোজাতি, বলদ, গাই মূর্খ গালিতে।
গবাদি Bengali definition [গবাদি] (বিশেষণ) গরু এবং গরুর মতো গৃহপালিত পশু। {(তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ) গো+আদি; (বহুব্রীহি সমাস)}
গরুর ন্যায় বুদ্ধিহীন বা বোধশক্তিতে ক্ষীণ; ষাঁড়ের মতো বিচারবুদ্ধিহীন। {(তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ) গো+চন্দ্র>; আবেস্ত ভাষায় ‘গব’ শব্দের অর্থ ষাঁড়}
গব্য Bengali definition [গোব্বো] (বিশেষণ) গরু সংক্রান্ত।
গাভী থেকে উৎপন্ন (গব্য ঘৃত)।
(বিশেষ্য) গাভী থেকে উৎপন্ন বস্তু (পঞ্চগব্য)। {(তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ) গো+য(যৎ)}
গাভী থেকে উৎপন্ন (গব্য ঘৃত)।
(বিশেষ্য) গাভী থেকে উৎপন্ন বস্তু (পঞ্চগব্য)। {(তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ) গো+য(যৎ)}
গোবর বলতে আমরা গোরুর বিষ্টাকেই বুঝি, কিন্তু গো শব্দের অর্থ যখন আকাশ, স্বর্গ, পৃথিবী মাটি হয় তখন গোবর কী কী অর্থ প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে একবার ভেবেছেন কী?
গো (জল) + বর (শ্রেষ্ঠ) = গোবর;
গো (আকাশ) + বর (শ্রেষ্ঠ) গোবর;
এই দুই গোরবকে আমরা বৃষ্টি বলতে পারি৷
গো (পৃথিবী) + বর = গোবর, এই পৃথিবী প্রদত্ত শ্রেষ্ঠগুলোর তালিকা করে কখনো কি শেষ করা সম্ভব?
গো (জল) + বর (শ্রেষ্ঠ) = গোবর;
গো (আকাশ) + বর (শ্রেষ্ঠ) গোবর;
এই দুই গোরবকে আমরা বৃষ্টি বলতে পারি৷
গো (পৃথিবী) + বর = গোবর, এই পৃথিবী প্রদত্ত শ্রেষ্ঠগুলোর তালিকা করে কখনো কি শেষ করা সম্ভব?
তাই সৃষ্টির প্রাণী গো কে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে থাকি।
ব্রহ্মা আদি পুরুষ যার শব্দের অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। যেমন আমার পিতা একজন ব্যক্তি এবং আমি একজন ব্যক্তি। আমরা যদি আমাদের বংশ-তালিকা দেখি, তাহলে দেখব যে, একজন ব্যক্তি থেকে আর একজন ব্যক্তির জন্ম হয় এবং আমরা যদি এইভাবে সৃষ্টির আদি পর্যন্ত খুঁজে দেখতে পারি, তাহলে দেখব, আমাদের পরম পিতা হচ্ছেন সেই আদি পুরুষ স্বয়ং ব্রহ্মা।
এখানে মূর্খ প্রভৃতি বা পৃথিবী গোপতি নিয়ে বলতে গেলে (গো) শব্দের অর্থ হচ্ছে গোলাকার, মানে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড। আর {পাল} শব্দের অর্থ হচ্ছে পালন কর্তা। যিনি এই বিশ্বজগত পালন করছেন তাকেই বলা হয় বিষ্ণু।
ওঁ উচ্চারণে (অ + উ + ম) শব্দে পাওয়া যায় তিনটি মহাশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। এখানে তিন শক্তিকেই তিনটি গুণ অভিহিত করি।
"প্রকৃতির তিনটি গুণ-সত্ত্ব, রজ এবং তম। পরমেশ্বর এক হলেও এই তিনটি গুণের প্রভাবে বিশ্বের সৃষ্টি -স্থিতি-লয়ের জন্যে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর রূপ ধারণ করেন।"
ব্রহ্ম শক্তি অভেদ। এককে মানলে, আর একটিকেও মানতে হয়। যেমন অগ্নি আর তার দাহিকা শক্তি, অগ্নি মানলেই দাহিকা শক্তি মানতে হয়, দাহিকা শক্তি ছাড়া অগ্নি ভাবা যায় না। সূর্যেকে বাদ দিয়ে সূর্যের রশ্মি ভাবা যায় না।"
এক ব্রহ্ম শক্তিকেই আমরা বিভিন্ন নামে অভিহিত করি— বলতে গেলে ত্রিমূর্তির
▪ ব্রহ্মা ▪ বিষ্ণু ▪ মহেশ্বর
▪ ব্রহ্ম + শক্তি
▪ পুরুষ + প্রকৃতি
▪ ব্রহ্মা ▪ বিষ্ণু ▪ মহেশ্বর
▪ ব্রহ্ম + শক্তি
▪ পুরুষ + প্রকৃতি
তিনি এক কিন্তু রুচির বৈচিত্র্যময়তার জন্যে প্রকাশ অনন্ত। সনাতন ধর্মানুসারে চিন্তার অতীত পরমেশ্বর যে রূপে সৃষ্টি করেন সেই রূপের নাম ব্রহ্মা, যে রূপে জগৎ পালন করেন সেই রূপের নাম বিষ্ণু এবং যে রূপে লয় বা নাশ করেন সেই রূপের নাম শিব বা মহেশ্বর। এই সহজ কথাটিই শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়ে খুব সুন্দর করে দেয়া আছে।
যেমন চন্দ্র ও চন্দ্রের কিরণ দুধ ও দুধের ধবলতার ন্যায় এক ও অভেদ।
ব্রহ্ম জগৎ সৃষ্টির এক মহাশক্তি বিষ্ণুকে জগতের সৃষ্টি পালনের। মহেশ্বরকে জগতের সৃষ্টি প্রলয়ের গুণ কর্ম অনুসারে এই তিন শক্তিকে এক সত্ত্বা পরমব্রহ্মকে এই জগতের মহাগুরু মহাবিশ্ব শক্তি বলে আমরা নামে জানি। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, এরাই পরব্রহ্ম স্বরূপ, সেই তিন গুণশক্তি ঈশ্বরকেই বুঝানো হয় সেই তিন শক্তিকে এক সত্ত্বা পরমব্রহ্মকে ধ্যানের মধ্যে উপাসন করি। ব্রহ্ম শব্দের অর্থ সর্ব্ববৃহৎ। যাঁর থেকে বড় কেউ নেই যিনি সকল কিছুর স্রষ্টা এবং যাঁর মধ্যে সকল কিছুর অবস্থান ও বিলয় তিনিই ব্রহ্ম। যে সকল কিছুই সৃষ্টি করেছেন ব্রহ্ম, সে সকল কিছুর পালন করেছেন আছেন, আর যে সবকিছুই প্রলয় করে থাকেন মহেশ্বর। ত্রিমূর্তির ভেতরে এক সত্ত্বাধিকারী পরমব্রহ্ম এই হলো চৈতন্যময় সত্ত্বা।
নিজেদের মিথ্যা ভাবদ্বারা ভাববাদী চেতনা পরিত্যাগ করুন, সঠিক তত্ত্ব দিয়ে সনাতন ধর্মকে রক্ষা করুন।
ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি!
জয় শ্রীরাম
হর হর মহাদেব
SVS
চট্টগ্রাম বিভাগীয় এক্টিভ কর্মী
শ্রী বাবলু মালাকার
(সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, চট্টগ্রাম)